
মঙ্গলবার ০৬ মে ২০২৫
আবু হায়াত বিশ্বাস, নয়া দিল্লি: ২৪ আকবর রোডের কংগ্রেসের সদর দপ্তর। মঙ্গলবার সকালে এই দপ্তর যেন নতুন করে প্রাণ পেল! কয়েক হাজার কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের ভিড় গোটা দপ্তরে। ফাঁকা মাঠে প্যান্ডেলের ভিতরে থিকথিকে ভিড় সংবাদমাধ্যমেরও। ভোটে ভাল ফল করবে দল, এই আশা নিয়ে হাজির হয়েছিলেন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা। দিনের শেষে দলের সাফল্যে তারা অন্তত নিরাশ নন। ইন্ডিয়া জোট যখন ২০০ পেরোয়, তখন উল্লাসে ফেঁটে পড়েন সমর্থকেরা। ঢাক, ঢোল, কাড়া নাকাড়া বাজতে শুরু করে। ভোটের ফল ঘোষণার দিনে কংগ্রেস দপ্তরে দু’টি বড় প্যান্ডেল তৈরি করা হয়। লাগানো হয় বড় জায়ান্ট স্ক্রিন। সকাল থেকেই ওই জায়ান্ট স্ক্রিনে চলছে নিউজ চ্যানেল। ভোট গণনার সঙ্গে বেলা যত গড়িয়েছে, ততই এগিয়েছে ইন্ডিয়া। একটা সময় বিজেপিকেও ছাপিয়ে যায় ইন্ডিয়া। বাংলায় তৃণমূলের বড় জয়ের খবর স্ক্রিনে ভেসে উঠতেই উল্লাসে ফেঁটে পড়েন কংগ্রেস সমর্থকেরা। ‘দিদি দিদি’ স্লোগানে মুখরিত হল কংগ্রেস দপ্তর। শোনাগেল, ‘দিদি নে ভাজপা কো দেখা দিয়া আপনা অকাত।’
ভোট গণনায় যত এগিয়েছে, ততই কংগ্রেস দপ্তরে ভিড় বাড়ে। দেশ-বিদেশের সংবাদমাধ্যমের ভিড়ে ঠাসা দপ্তর যেন নতুন করে প্রাণ পেল। কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা বলছেন, এটা ঠিকই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাইনি ইন্ডিয়া। তবে বিজেপির সঙ্গে সেয়ানে সেয়ানে টক্কর দিয়েছে বিরোধীরা। কংগ্রেসের সাফল্যে খুশি কর্মী-সমর্থকেরা। গত দু’বার যেখানে কংগ্রেস ৫০ আসন পেতে হিমশিম খেয়েছিল, এবার ছবিটা একেবারেই আলাদা। ২০১৪ লোকসভায় সাকুল্যে ৪৪টি আসন জিতেছিল হাত শিবির। ২০১৯ সালে গতবারের সঙ্গে যোগ হয়েছিল আরও ৮ আসন। অর্থাৎ গত লোকসভা ভোটে কংগ্রেস পেয়েছিল মোটে ৫২টি আসন। সন্ধেয় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গে, সোনিয়া গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা কংগ্রেস দপ্তরে আসেন। জনগণের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন খাড়গে। বলেছেন,লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে স্পষ্ট জনগণের জয় নিশ্চিত। এটা গণতন্ত্রের জয়। নৈতিক হার হয়েছে মোদির। অন্যদিকে, কাল, বুধবার ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক রয়েছে দিল্লিতে। সবার সঙ্গে আলোচনা হবে, জানিয়েছেন রাহুল গান্ধী। তিনি জানান, জাতি জনগণনা, মহালক্ষ্মী যোজনার মতো প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হবে। কংগ্রেস সভাপতি বলেছেন, ‘এবারের নির্বাচনে কোনও একটি দল গরিষ্ঠতা পাইনি। এই জনমত মোদিজির বিরুদ্ধে। মোদির নৈতিক হার হয়েছে। প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও নির্বাচনে লড়েছি। ইতিবাচক প্রচার করেছি আমরা।’
মধ্যপ্রদেশের ভোপাল থেকে সোমবারই দিল্লি এসেছেন রাকেশ কুশওয়াহ। দিল্লিতে পৌঁছে সোজা কংগ্রেস দপ্তরে এসেছেন। রাহুল গান্ধীর ভক্ত। ভারত জোড়ো যাত্রার সময় যেমন দাড়ি রেখেছিলেন রাহুল,ঠিক তেমনই একগাল দাড়ি মুখে। পরনে সাদা শার্ট, সঙ্গে ডেনিম জিনস। মুখে কাচা-পাকা দাড়ি। কংগ্রেস প্রেস কনফারেন্স কক্ষে বসেছিলেন। চোখ ছিল খবরের চ্যানেলে। রাকেশ কুশওয়াহ অবিকল রাহুল গান্ধীর মতো দেখতে। বছর আটচল্লিশের রাকেশ কুশওয়াহ বললেন,‘রাহুল গান্ধীকে আমার নেতা। তাঁর জন্যই ভোপাল থেকে এসেছি। হার কিংবা জিত, সর্বদাই তাঁর পাশে রয়েছি।’ জানালেন, বাড়িতে তাঁর দুই কন্যা আছে। খবরের কাগজে রাহুলজির ছবি দেখেই বলে,‘আখবার মে পাপা তোমাহারা ফটো ছাপা হ্যায়।’